মহাবিশ্বের মহাভিযান 

আবদুল্লাহ আল মঈনী 

*** *** *** *** ***

স্রষ্টা সর্বদ্রষ্টা, সর্বজ্ঞানী, সর্বশক্তিমান। ইন্দ্রিয়ের প্রত্যেকটি অনুভূতি তাঁর ঐশ্বরিক ইশারা। অনুভূতির কারণ অনুসন্ধানপূর্বক শুদ্ধ বিশ্বাসেই হয় অভীষ্ট ফলাফল অর্জন। তিনি সকলের জন্যে সর্বত্র বিরাজমান।

যিনি প্রত্যেকটি মুহূর্তের রচয়িতা, তিনি অবশ্যই তাঁর সৃষ্ট চরিত্রের বৈশিষ্ট্যের আলোকে কল্যাণকর উপসংহার নির্বাচন করেন। যেহেতু তিনি সর্বদ্রষ্টা, তিনিই ভালো জানেন যে, সম্ভাব্য সকল বিন্যাস ও সমাবেশের মাঝে কোন জায়গাটি সেই চরিত্রের মর্যাদা ধারণে সক্ষম। পাঠাগারে কোন শ্রেণীর বই কোথায় রাখলে পাঠকদের সময়ের (জীবনকাল) সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহার হবে তা গ্রন্থাগারিকই (যিনি নিজেও একজন লেখক) ভালো জানেন। প্রকৃতি মহাবিশ্বের এক মনোযোগী পাঠক। মহাবিশ্বের গ্রন্থাগারে মনোনীত আমরা সবাই এক একটি বই যা প্রকৃতির অনুকূলে লিখা হয়েছে। যার রচয়িতা স্বয়ং স্রষ্টা।

একটি বই লিখার সময় লেখক চরিত্র রূপায়নে বিভিন্ন দৃশ্য বা অঙ্কের সংলাপ সমাবেশ করে সর্বশেষ সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হয়ে থাকেন। যিনি স্রষ্টা তিনি সর্বদাই সঠিক। তিনি তাঁর সৃষ্টিকে সর্বাধিক ভালোবাসেন। তাই জন্যেই বারবার সুযোগ করে দেন কল্যাণকর যাত্রার অভিপ্রায়ে। দিগ্বিদিকহীন জীবনের মহাসাগরে চলমান আমরা সবাই। নিশ্চয়ই নিজ নিজ বিশ্বাস, ধৈর্য্য, আর প্রার্থনার অপার কল্যাণে সেই দ্বীপে আমরা পৌঁছাতে পারব যার প্রকৃতি আমাদের ভালোবেসে আমাদের জন্যে অপেক্ষা করছে তাঁর কল্যাণকর ইশারায়। সময়ের প্রবাহে সম্ভাব্য সকল সমাবেশে বিভিন্ন দ্বীপে চরিত্রের উপস্থিতির পরীক্ষার ফলে চরিত্রের রুপায়নে সার্থকতা আসে, যার সাথে অনির্ধারিত জায়গাগুলো সেই চরিত্রের কল্যাণে আশীর্বাদপ্রাপ্ত হয় আর সেই মনোনীত জায়গার সাথে মনোনীত চরিত্রের মেলবন্ধনে সঠিক সিদ্ধান্তে, সঠিক সময়ে অভিযানের বীজ মূল বিস্তারের সঠিক মাটি, আলো, বাতাস, তাপমাত্রায় পরিণত হয় এক মহান মহীরুহে যার দ্বারা কল্যাণের স্রোত এগিয়ে যাবে যুগ থেকে যুগান্তরে।

একটি ঘটনা জন্মদানে চরিত্রের থাকে স্বাধীনতা। ঘটনার পরিক্রমণে আমাদের সীমাবদ্ধ জ্ঞান-দিগন্তের ওপারে সর্বোৎকৃষ্ট সম্পাদনায় থাকেন স্বয়ং স্রষ্টা। অভিযানে প্রত্যেকের যাত্রা কৌশল অবশ্যই ভিন্ন। একই ঘটনা প্রত্যেকের জন্য ভিন্ন ভিন্ন বিম্বের প্রতিফলন ঘটায় যেখানে তুলনার স্থান কূপের অতলে। তুলনার আদালতে স্বীয় সীমাবদ্ধতাই হয় বিচারের সংবিধান। স্রষ্টার সরল সংবিধান অসীম থেকে সমান্তরালে আসা সত্যান্বেষী আলোকের স্বর্গীয় সহচর।

রহস্যের অভিযাত্রায় প্রাণবন্ততা আর প্রাঞ্জলতা নিয়ে আসে প্রচলিত প্রতিবন্ধকতা। হাঙ্গর মহাসাগরে থাকবে, তাই তো স্বাভাবিক। বরং, আমাদের অভিযাত্রা, সেই অভীষ্ট দ্বীপে প্রতিষ্ঠার অভিপ্রায়ই বৈপরীত্য। প্রতিবন্ধকের বৈপরীত্যেই আসে এগিয়ে যাওয়ার ত্বরণ। হাঙ্গরের তরঙ্গে স্থবির হয়ে কালক্ষেপণে জীবনের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মুহূর্তের উপলব্ধির অকাল প্রয়াণ ঘটে। হাঙ্গরের উপস্থিতি থাকুক আর না থাকুক, উভয় ক্ষেত্রেই একই উৎসাহে আর উদ্দীপনায় এগিয়ে চলার সৎসাহসেই সংগ্রামের সফল সমাপ্তি আসে - বারবার।

মহাবিশ্বের মহাভিযানে থাকে স্রষ্টার অপার সম্প্রদান - যে দান কাজে লাগে বারবার - কল্যাণেই নিয়োজিত হবে সে আত্মা প্রতিবার - সততা, সত্য, আর সরলতা যার শাশ্বত অঙ্গীকার।

*** *** *** *** ***

I BUILT MY SITE FOR FREE USING